যে ৬টি কারণে আপনার প্যাশনকে প্রাধান্য দেবেন

শেয়ার করুন

বাচ্চাদের বলা হয় যা ভালো লাগে তাই করতে। কিন্তু এরা যখন বড় হয় তখন আর অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গি একইরকম থাকে না। তখন বলা হয় শখের বা ভালো লাগার পেছনে সময় নষ্ট না করে পড়াশুনা করে একটা লাভজনক পেশায় ঢুকে যেতে। কারণ,ওসব ভালো লাগার নাকি দাম নেই বাজারে!

কিন্তু সত্যিটা হলো প্যাশনই এনে দেয় সাফল্য, প্রতিদিন বাঁচতে সাহায্য করে। নিজের স্বপ্ন যদি নিজে তৈরি না করা যায় তো জীবনটাকে উপভোগ করা যায় না।

আমরা প্রায়শই শখ আর প্যাশন তথা আসক্তির মধ্যে গোলমাল পাকিয়ে ফেলি। শখ হলো এমন কিছু যা করতে ভালো লাগে, এর জন্য পরিশ্রম করাটা জরুরী নয়। আর প্যাশন হলো ভালো লাগার কাজটি করার জন্য পরিশ্রম করা। প্রতিটা মানুষেরই উচিত নিজের প্যাশন খুঁজে বের করা। কারণ-

যা যা থাকছে

এটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য তৈরি করে দেয়ঃ

আমরা না বুঝেই অগুরুত্বপূর্ণ কাজে সময় নষ্ট করি। প্রয়োজনীয় কাজগুলো তাই পড়ে থাকে আর দিনশেষে একরাশ হতাশা নিয়ে ঘুমুতে যাই আমরা। টিভি,ফেইসবুক,ইমেইল,বন্ধু,পরিবার এরকম হাজারো বিষয়ে সময় দিতে গিয়ে নিজের জন্যই সময় থাকে না আমাদের। প্যাশন আপনাকে শেখাবে কোনগুলো গুরুত্ব বহন করে। যদি আপনি প্যাশনকে আঁকড়ে ধরে রাখেন তো অগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ঝরে যাবে আপনাতেই। যদি উদ্দেশ্য স্বচ্ছ হয় তো তা অর্জনও দ্রুত হয়। হ্যারিয়েট টাবম্যান বলেছেন, ‘প্রতিটা অসামান্য স্বপ্নই শুরু হয় একজন স্বপ্নবিলাসীর হাত ধরে।সর্বদা মনে রাখবে পৃথিবীকে বদলে দেয়ার জন্য তোমার সামর্থ্য, ধৈর্য এবং প্যাশন আছে।’

আরো পড়ুনঃ নেতিবাচক চিন্তা দূর করার উপায় – থাকুন চিন্তা মুক্ত

জীবিকার যোগানঃ

প্যাশনই যোগান দেবে আপনার জীবিকার। কি অবাক লাগছে? এটা বেশ সহজ একটা বিষয়। প্যাশনকে প্রাধান্য দিলে অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সরে যাবে, তাতে আপনি প্যাশনকে ফোকাস করতে পারবেন। এবং উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে পারবেন। আর এই পরিশ্রমই দিনশেষে আপনার জীবনধারণের উপায়গুলোর সদ্ব্যবহার করতে সাহায্য করবে।

আনন্দঃ

প্যাশনের পেছনে লেগে থাকলে অসীম আনন্দ পাবেন আপনি। বিরক্তি ছুঁতে পারবে না একদম। প্যাশন নিয়ে সবাই বিরক্তিহীনভাবে কাজ করে যেতে পারে। তো যে কাজে আনন্দ আসে আপনি তো সেটাই করবেন, তাই না?

প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেয়াঃ

প্যাশন কেবল প্রয়োজনকেই গুরুত্ব দেবে। অপ্রয়োজনকে দূর করে দেবে আঙিনা থেকে। বহু অপ্রয়োজনীয় জিনিস যা আমরা ত্যাগ করতে পারি না, অথচ ত্যাগ করা উচিত, সেরকম আগাছা উপড়ে ফেলবে প্যাশন। একদিকে আপনার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে দেবে। আপনি মুক্তি পাবেন অযাচিত অপ্রয়োজনের হাত থেকে। এটি বুঝতে শেখাবে যে বেঁচে থাকতে বেশি জিনিসের প্রয়োজন নেই। অনেকেই দেখবেন সুখস্মৃতি রোমন্থনের চেয়ে বাড়ি-গাড়ি এসব নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করে। কিন্তু এসব আলোচনা কেবল হতাশাই বাড়ায়। আর সুখের স্মৃতিগুলো জীবনকে সজীব রাখতে সাহায্য করে। যখন জিনিস সংগ্রহের বদলে স্মৃতি সংগ্রহ করবেন, তখন বুঝবেন জীবনের মানে।

আরো পড়ুনঃ মনের ক্ষত সারানোর উপায়

 

প্যাশন আপনার প্রাপ্যটুকু দেবেঃ

আপনি কী ভালোবাসেন সেটা বিষয় নয়, আপনি প্রাপ্যটুকুই পাবেন এর কাছ থেকে। কারণ, প্যাশন নিয়ে কাজ করলে সেই কাজে দক্ষতা অর্জন করা সহজ হবে। আসলে আপনি কী করতে পারবেন এর কোনো সীমানা নেই। আপনি দক্ষতা অর্জন করতে পারলে পৃথিবীই পথ করে দেবে আপনাকে।

স্বীকৃতিঃ

প্যাশনের পেছনে ছুটতে চাইলে অনেকেই বাধা দেবে, অনুৎসাহিত করবে,এমনকি হাসবেও। কিন্তু এটা যদি সত্যি আপনার প্যাশন হয় তো কোনো কিছুই আপনাকে দূরে রাখতে পারবে না। সফলতা অর্জিত হলে অবশ্য নিন্দুকেরাই সবচেয়ে বড় ভক্ত হয়ে যাবে। হান্টার এস, হাম্পসন বলেছেন, ‘যা তোমার রক্তে দোলা দেয় সেটাই করা উচিত।’

প্যাশন স্বর্গীয় দান। আমাদের সামনে দু’টো পথ খোলা। এক, একে শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করা আর দুই, একে জলে ভেসে যেতে দেয়া। পছন্দ আপনার। কোনটি বেছে নেবেন আপনিই জানেন। তবে আমি আমি বলবো নিজের স্বপ্নকে বাস্তব করার চেষ্টা করুন এবং পৃথিবীকে তার যোগ্য প্রাপ্তিতে উদ্ভাসিত করুন।


শেয়ার করুন

Leave a Comment