ব্যক্তিগত উন্নয়নের ১১ টি প্রফেশনাল উপায়

শেয়ার করুন

আমরা জন্মগত ভাবে সব কিছু শিখে আসি নাই। আমাদের চলার পথে অনেক কিছু শেখা হয়েছে। সেখানে ছিল অনেক ভুল, সঠিক গাইডলাইনের অভাব, পদ্ধতিগত ভুল সহ আরো অনেক কিছু। আমরা যারা একটু ভাল পরিবেশ, ভাল শিক্ষা ব্যবস্থা এবং পারিবারিক অবস্থা ভাল ছিল তারা অন্যদের চেয়ে ব্যক্তিগত উন্নয়নের দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে।

আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যাদের সাথে কথা বলতে, কথা শুনতে,  সময় কাটাতে আমাদের ভাল লাগে। তাই আমাদের মাঝে এমন কিছু আছে যা আমরা উন্নতি করা প্রয়োজন। মানুষের মাঝে অনেক গুনাবলি রয়েছে যা মানুষ উন্নতি করার মাধ্যমে ব্যক্তিগত অনেক কিছু অর্জন করতে পারে।

আজকে কথা বলব ব্যক্তিগত উন্নয়নের ১১ টি প্রফেশনাল উপায় যা আমদের ব্যক্তিগত এবং প্রফেশনাল জীবনে অনেক কাজে আসবেঃ

যা যা থাকছে

১। প্রতিদিন একটি বই পড়ুনঃ

কেননা বই জ্ঞান প্রসারের উৎস। আপনি যত বই পড়বেন আপনার জ্ঞান তত বৃদ্ধি পাবে।  আপনি কাদের বই পড়বেন? আপনি পড়তে পারেন ইতিবাচক বই সমূহ। যা আপনাকে ইতিবাচক চিন্তা করতে এবং কাজ করতে সহায়তা করবে। আপনি এই লিঙ্ক থেকে যে বই গুলো আছে সেগুলো পড়তে পারেন।

এখানে রয়েছে ইতিবাচক চিন্তার ১০টি সেরা বইয়ের তালিকা।

 

২। নতুন কোন শখ খুজে বের করুনঃ

আপনার স্বাভাবিক শখ ছাড়া এমন নতুন কোন কিছু আছে কি যা আপনি বাছাই করতে পারেন? আপনি নতুন কোন খেলা শিখতে পারেন যা আগে আপনার ততটা খেলা হয় নাই। আপনার নতুন শখ বিনোদনমূলকও হতে পারে। আবার হতে পারে এ্যাডভেঞ্ছারমূলক কিছু যেমনঃ ফটোগ্রাফি।

আজকাল অনেকেই ফটোগ্রাফি কে পেশা হিসেবে নিয়েছে। আপনি না হয় আপনার মোবাইল ফোনটি দিয়ে শুরু করতে পারেন। আপনার এই নতুন শখটি আপনাকে শারিরিক এবং মানুষিক অনেক দিক দিয়ে প্রসারিত করবে।

 

৩। নতুন কোন দক্ষতা বাড়াতে পারেনঃ

আপনি বর্তমানে যে কাজটি করছেন সেটার নিশ্চয় আরো উন্নতি করার অনেক ধাপ রয়েছে। আপনি আপনার দক্ষতার পরবর্তী স্টেপ অর্জনের জন্য কাজ করতে পারেন।

যেমনঃ আপনি একজন ক্রিকেটার এবং আপনি অফ সাইডে খেলতে বেশি পছন্দ করেন এবং আপনি ভাল পারেন। আপনি লেগ সাইডে খুব একটা ভাল খেলতে পারেন না। তাহলে আপনার সেটা হল কিভাবে লেগ সাইডে ভাল খেলা যায় সেই বিষয়ে মনোযোগ দেয়া।

 

৪। প্রতিদিনের কাজের তালিকাঃ

প্রতিদিনের কাজের তালিকা আপনার কাজ গুলো যেমন শেষ করতে সাহায্য করবে তেমনি আপনি কাজে অনেক মনুযোগী হয়ে উঠবেন। আপনি আগামী কাল কি কি কাজ করতে চান অথবা আপনাকে করতে হবে তার একটা টু-ডু লিস্ট করে আপনার টেবিলে রেখে দিতে পারেন।

তাহলে সকালে ঘুম থেকে উঠেই আপনি দিনের কাজ শুরু করে দিতে পারবেন। এটা আপনার মাঝে এক ধরনের নিয়মানুবর্তিতা গঠনে সহায়তা করবে।

৫। নতুন কোন কোর্সে ভর্তি হতে পারেনঃ

দক্ষতা লাভের একটি চমৎকার উপায় হল নতুন কোন কোর্সে ভর্তি হওয়া। দীর্ঘমেয়াদি কোর্স হতে হবে না, আপনি বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, সেমিনারে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

এ থেকে আপনি নতুন অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। এমন অনেক বিষয় আপনি জানতে পারবেন যা আপনি আগে কখনো বিবেচনা করেন নাই।

 

৬। ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠুনঃ

আমরা সবাই জানি খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা স্বাস্থ্যের জন ভাল। ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠলে দেখবেন দিনটা আপনার কাছে অনেক বড় মনে হবে এবং আপনি সকালেই অনেক কাজ শেষ করে ফেলেছেন। এই অভ্যাস আপনার মাঝে নতুন কিছু সৃষ্টি করবে।

আপনি যদি অনেক দিন হল সকালে ঘুম থেকে না উঠে থাকেন, তাওলে আজকেই সিদ্ধান্ত নিন আগামীকাল সকালে ঘুম থেকে উঠবেন। ঘুম থেকে উঠে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ুন। দেখবেন সকালটা আপনার কাছে কত ভাল লাগছে এবং পাশাপাশি আপনার ব্যায়ামও হয়ে যাবে।

 

৭। পজিটিভ চ্যালেঞ্জ নিতে পারেনঃ

আপনি যদি আপনার বর্তমান অবস্থান থেকে সবচেয়ে ভাল ফলাফল নিতে চান তাহলে আপনাকে চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি সাহায্য করতে পারে। চ্যালেঞ্জ নিলে আপনি কাজের প্রতি অনেক বেশি মনোযোগি হবেন এবং পরিশ্রমী হবেন। খুজে বের করুন কে আপনার কম্পিটিটর। প্রয়োজনে আপনি তাকে জানিয়ে দিন যে আপনি একটা সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তাকে হারাতে চান।

 

৮। পদক্ষেপ নিনঃ

আপনি আমি অনেক কিছু করতে চাই বা হতে চাই কিন্তু কাজ করতে প্রস্তুত নয়। আপনাকে কোন কিছু শেখা বা উন্নয়ন করার সবচেয়ে ভাল উপায় হল পদক্ষেপ নেয়া বা সরাসরি কাজে মনোনিবেশ করা।

মনে রাখবেন আপনারা কাজ ই আপনার কাজ কে শেষ করতে বেশি সাহায্য করবে। শুধু অপেক্ষা করলে আপনার কোন কিছু হবে না, যদি না আপনি পদক্ষেপ নেন। তাই আপনি যা পরিকল্পনা করেছেন তার দ্রুত কাজ শুরু করুন।

 

৯। যারা আপনাকে উৎসাহিত করে তাদের কাছ থেকে শিখুনঃ

আপনি যাদের প্রশংসা করেন তাদের কথা চিন্তা করুন। যাদের দ্বারা আপনি প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত হউন। তাদের মাঝে নিশ্চয় এমন কিছু আছে যা আপনার মাঝে নেই। তাহলে আপনি তাদের কাছ থেকে শিখুন। মানুষ তো মানুষের কাছ থেকেই শিখে। এতে বরং আপনারই লাভ হবে।

 

১০। খারাপ অভ্যাস ত্যাগঃ

আপনার যদি কোন বদ অভ্যাস থেকে তাকে তাহলে তা পরিহার করার চেষ্টা করুন। এটা হতে পারে আপনার আরেকটা চ্যালেঞ্জ।

যা অর্জনে আপনাকে অনেক বেশি ব্যক্তিগত উন্নয়নে সহায়তা করবে। এবং একটি ভাল অভ্যাস শুরু করুন। যেমনঃ নামাজ পড়া। দেখবেন আপনার মাঝে এমন কিছু বিষয় কাজ করছে যা আপনি আগে অনুভব করেন নাই।

১১। ব্যক্তিগত উন্নয়নে সচেতন হোনঃ

আপনার মাঝে যে সকল গুনাবলি আছে আর যে সকল গুনাবলি নেই তার একটা আনুমানিক লিস্ট করুন। চাইলে আমাকে আপনি ইমেইল করতে পারেন। আমি চেষ্টা করব আপনাকে সাহায্য করতে।

কিন্তু কোন কিছুই কাজে আসবে না যদি না আপনি নিজে ব্যক্তিগত উন্নয়নে সচেতন হোন। আপনাকে সংকল্পব্ধ হতে হবে যে “আমি এই বিষয় গুলো আমার মাঝে চাই এবং এই বিষয়গুলো পরিহার করতে চাই। তাহলেই আপনার ব্যক্তিগত উন্নয়ন অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।

উপরের বিষয়গুলো আপনি ফলো করলে আমি নিশ্চিত বর্তমানের আপনি আর এর পরের আপনির মাঝে অনেক তফাৎ দেখা যাবে। আমার এই লিখা যদি আপনার ভাল লেগে থাকে এবং অন্য কারো উপকারে আসবে বলে মনে হয় তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

ব্যক্তিগত উন্নয়ন সম্পর্কে আপনার চিন্তা এবং পরামর্শ থাকলে কমেন্ট করে জানান। ভাল থাকবেন সবাই। সবার ব্যক্তিগত জীবন অনেক সুন্দর হোক।


শেয়ার করুন

Leave a Comment