একটি নতুন ব্যবসায় শুরু করার পূর্বে যে সকল বিষয় জানা খুব জরুরি

শেয়ার করুন

একটি নতুন ব্যবসায় শুরু করার পূর্বে যে সকল বিষয় জানা খুব জরুরিঃ ব্যবসা শব্দটির সঙ্গে ছোট-বড় আমরা সবাই পরিচিত। ব্যবসার প্রচলন শুরু হবার পর থেকেই দিনে দিনে এটি পৌঁছে গেছে অন্যতম উচ্চ শিখরে। আমাদের উপমহাদেশে এই শব্দটির সাথে আরো বেশি পরিচিত করিয়ে গিয়েছে বৃটিশ বেনিয়ারা, যারা একসময় সারা পৃথিবীতেই একচেটিয়াভাবে ব্যাবসা চালিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে চাকুরীর পাশাপাশি ব্যবসা অত্যন্ত জনপ্রিয় আকার ধারণ করেছে। একসময় শুধুমাত্র আদি-ব্যবসায়ী এবং বয়স্ক মানুষের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকলেও প্রযুক্তির উন্নয়নে দিন দিন তরুণরাও ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে।

 

এখনো ব্যবসাকেই চাকুরী থেকে বেশি প্রাধন্য দেওয়া হয় কারণ যেকোন ধরণের ব্যবসাই হোক এতে রয়েছে নিজস্ব স্বাধীনতা তার সঙ্গে রয়েছে নিজস্ব আইডিয়া যাচাই করে দেখার সুযোগ। যা সাধারণত কোন চাকুরীর মাঝে থাকেনা কারণ একটি চাকুরীরস্থলে একটি চেইন অফ কমান্ডের মাধ্যমে সব কিছু পরিচালনা হওয়ার ফলে এতে স্বিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকে খুবই কম।

 

তবে অনলাইন-অফলাইন যেকোন ধরণের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রেই কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলতে হয়। নতুবা ব্যবসায়ের সব চালান হয়ে যেতে পারে লোকসান, আবার গোড়াতেই হারিয়ে যেতে পারে আগ্রহ। যেকোন ব্যবসার ক্ষেত্রেই রয়েছে ঝুঁকি , কোন ব্যবসায়ই ঝুঁকিমুক্ত নয় তবে কিছু সাধারন নিয়ম মেনে আগালে তাতে ক্ষতির পরিমাণ খুব বেশি না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যা যা থাকছে

প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও টিন নাম্বারঃ

 

যেকোন ধরণের ব্যবসার ক্ষেত্রেই আপনার প্রয়োজন হবে সরকারি কিছু লাইসেন্স এবং টিন নাম্বার যা না থাকলে আপনি ভবিষ্যতে পরতে পারেন আইনী জটিলতায় এমনকি বন্ধ হয়ে যেতে পারে আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানও। তাই ব্যবসা শুরুর আগেই বৈধ উপায়ে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স এবং টিন নাম্বার সংগ্রহ করুন।

 

এলাকা যাচাই করুনঃ

 

আপনি যে এলাকাকে টার্গেট করে ব্যবসা করতে চান আগে কয়েক মাস সেই এলাকা সম্পর্কে রিসার্চ করুন, সেখানে আপনার ব্যবসায়ী পণ্যের চাহীদা কেমন হতে পারে। আপনি চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারবেন কিনা কিংবা আপনার উৎপাদন থেকে সেখানের চাহিদা কম কিনা সেসব যাচাই করুন, নয়তোবা আপনি হতে পারেন ক্ষতির সম্মুখীন।

 

ব্যবসাকে কিভাবে পরিচালনা করবেন তার সঠিক পরিকল্পন তৈরি করুনঃ

 

ধরুন আপনার মূলধন ১০ লক্ষ টাকা, কিন্তু আপনি যে ব্যবসায় করতে চান তার জন্য যোগান লাগবে ১৫ লক্ষ টাকা তাহলে কি হবে বুঝতে পেরেছেন? সেক্ষেত্রে আপনাকে অন্য কোন উৎস থেকে বাকি ৫ লক্ষ টাকা যোগাড় করতে হবে। এছাড়াও আপনি কতদিনে সেসব পণ্য উৎপাদন করবেন বা কি ধরণের পণ্য কেনা-বেচা করবেন, তাতে আপনার কতটুকু মুনাফা করা টার্গেট এবং কিভাবে কি করলে আপনি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়ে লাভের সম্মুখীন হবেন এগুলো সব যাচাই-বাছাই করে তৈরি করে ফেলুন একটি নিখুঁত প্ল্যান।

 

আরো পড়ুনঃ জীবনে যে কোন কিছু অর্জন করার ১০টি সেরা উপায়

 

একটি সুন্দর নাম হতে পারে আপনার ব্যাবসার সফলার চাবিকাঠিঃ

সুন্দর কিছু কে না পছন্দ করে? আর সুন্দর একটি নাম তো ব্যবসায়ের একটি প্রধান অঙ্গ। অনেক সময় একটি সুন্দর নামের কল্যাণেই ক্লিক করে যায় একটা ব্যবসা যার ফলে লাভবান হন ব্যবসায়ী। তাই এক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভ এবং অর্থবোধক নাম ব্যবহারের চেষ্টা করুন।

 

ব্যবসায়ের স্থান নির্বাচন করুনঃ

 

আপনি কোন এলাকায় ব্যবসা শুরু করতে চান এবং কোন স্থান থেকে ব্যবসায়ীক কাজ করলে আপনার পরিবহণ খরচ হ্রাস পাবে সেরকম অনুযায়ী স্থান নির্বাচন করুন।

 

প্রতিষ্ঠানের নাম এবং লোগো সহ ভিজিটিং কার্ড তৈরি করুনঃ

 

ভিজিটিং কার্ড একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচয় বহন করে তাই শুরুতেই কোম্পানীর নিজস্ব নাম এবং লোগো সহ ভিজিটিং কার্ড তৈরি করুন এবং সর্বত্র তা ব্যবহারের চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে গুরত্ত্বপূর্ন কর্মচারীদের নামেও ভিজিটিং তৈরি করতে পারেন কোম্পানীর ডিজাইনসহ কার্ডে।

 

একটি নিয়মাবলী চার্ট তৈরি করুনঃ

 

যেকোন ধরণের প্রতিষ্ঠানই কিছু নিয়ম মেনে নিজেদের কাজ করে যেটি লঙ্ঘন করার ক্ষমতা প্রতিষ্ঠানের মালিকেরও নেই। এতে যেমন একটি ডিসিপ্লিন কাজ করে এবং কোম্পানীও অযাচিত ক্ষতির সম্মুখীন হয়না। তাই ব্যবসার প্রারম্ভেই তৈরি করে নিন নিয়মানুবলীগুলো।

 

পরামর্শ গ্রহণঃ

 

আপনার ব্যাবসায় সফল হবার জন্য সবচাইতে গুরত্বপূর্ন অংশগুলোর মধ্যে একটি হলো আপনি যে ধরণের ব্যবসা করত চান সে ধরণের পুরানো ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ রাখুন। তাদের সঙ্গে থেকে যতটা সম্ভব সে ব্যবসা স্বম্পর্কে ধারণা নিন। যেসব বিষয়ে আপনার মনে সংশয় আছে সেগুলো প্রশ্ন করার মাধ্যমে জেনে নিন। এতে করে ব্যবসায়ের মাঝখানে কোন সমস্যার সমাধানের জন্য তাৎক্ষনিক স্বিদ্ধান্ত নিতে আপনার সুবিধা হবে।

শুরুটা হোক নতুন কিছুর মাধ্যমেঃ

 

মানুষের প্রধাণ স্বভাবের মধ্যে অন্যতম হলো মানুষ সর্বদাই নতুনত্বের খোঁজ করে। আর আপনিও এই সুযোগে নতুন কিছুর মাধ্যমে শুরু করতে পারেন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন মানুষ সেসবের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করুনঃ

 

বর্তমান প্রযুক্তির সময়ে আপনার ব্যবসায়ের মার্কেটিংয়ের জন্য সবচাইতে মাধ্যম হতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কারণ এখন সকল শ্রেণীর মানুষই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের সাথে জড়িত, এবং ব্যবসা শুরুর প্রারম্ভে এটিই হতে পারে আপনার ব্যবসার প্রচারণা চালানোর অন্যতম একটি মাধ্যম।

একটি নতুন ব্যবসার শুরুতে এরকম কিছু সাধারণ নিয়ম-কানুন অনুসরণ করলে আপনিও হতে পারেন সফল। তাই কোন নতুন ব্যবসার শুরুর আগে এগুলো জেনে নিন করুন ঝামেলামুক্ত ব্যবসায়।

এই আর্টিকেলটি আপনার ভাল লেগে থাকলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের মাঝে। আপনার এই শেয়ার আরো একজনের উপকার হতে পারে। কমেন্ট করে জানাতে পারেন আপনি কি বিষয়ে আর্টিকেল চান। আমরা আপনার পরামর্শকে সম্মানের সাথে গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

ভাল থাকবেন সবসময়। সবার জীবন অনেক সুন্দর হউক।


শেয়ার করুন

Leave a Comment