আত্মহত্যা করার আগে এই ছোট্ট গল্পটি একবার হলেও পড়ুন

শেয়ার করুন

মানব চরিত্র সম্পর্কে আমার সবচেয়ে দুঃখজনক যে কথা জানা আছে তা হলো, আমরা সকলেই জীবন যুদ্ধ এড়িয়ে চলতে চাই। আমরা সবাই দিগন্তপারের কোন মায়া গোলাপের স্বপ্নে আচ্ছন্ন। কিন্তু জানালার পাশে যে অসংখ্য গোলাপ ফুটে রয়েছে তা আমরা দেখি না।

আমরা এরকম বোকামি কাজ করি কেন?

স্টিফেন লীকক লিখেছিলেন, ‘আমাদের জীবনের ছোট্ট শোভাযাত্রা কি অদ্ভুত? শিশু ভাবে ‘আমি যখন বড় হব।’ কিন্তু বড় হবার পর সে বলে, ‘আমি যখন আরো বড় হব।’ বড় হয়ে সে বলে, ‘যখন আমি বিয়ে করব।’ কিন্তু বিয়ে করার পর কি হল? চিন্তাটা দাঁড়ালোঃ ‘আমি যখন অবসর নেব।’ কিন্তু অবসর নেবার পর সে পিছনে তাকালে দেখে অতীতের দৃশ্য-একটা শীতল পরশ যেন বয়ে যায়। সবাই সে উপভোগ বঞ্চিত হয়েছে। আমরা ভুলে যাই এ জীবন উপভোগের জন্যই প্রতিদিন, প্রত্যেক মুহূর্ত তাকে উপভোগ করতে হয়।’

ডেট্রয়টের প্রয়াত এডওয়ার্ড ই. ইভান্স দুশ্চিন্তায় প্রায় আত্নহত্যা করতে যান, কিন্তু যেদিন তিনি বুঝতে পারলেন, ‘বেঁচে থাকাতেই জীবনের আনন্দ প্রতিটি মুহূর্তে’ – তখনই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরে গেল।

 

আরো পড়ুনঃ জীবনে যে কোন কিছু অর্জন করার ১০ টি সেরা উপায়

 

দারিদ্রের মধ্যে তিনি মানুষ হন, অর্থ রোজকার করেন প্রথম সংবাদপত্র বিক্রি করে, এমনকি মুদির দোকানেও কাজ করেন। সাতজনের পরিবারের রুটি জোগানোর দায়িত্ব নিয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিকের কাজ নেন। সামান্য মাইনে ছিল তার তবু কাজটা ভয়ে ছাড়তে পারতেন না। আট বছর কাটার পর তিনি সাহস সঞ্চয় করে নিজে কিছু করার চেষ্টা করেন।

 

তারপর ধার করে মাত্র পঞ্চান্ন ডলার ব্যবসায় লাগিয়ে তাকে করে তোলেন বিশাল – বছরে তার আর হয় বিশ হাজার ডলার। কিন্তু তারপরই কুয়াশায় সব আচ্ছন্ন হয়ে গেলো-ধ্বংসের কুয়াশা। এক বন্ধু অনেক টাকা ঋণ দিলাম-সে দেউলিয়া হয়ে গেল। একটার পর একটা বিপদ নেমে পড়ল। তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি ঘুমাতে পারতাম না, খেতে পারতাম না। অদ্ভুতভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লাম। দুশ্চিন্তা, শুধু দুশ্চিন্তাই আমাকে অসুস্থ করে তোলে। একদিন পথে জ্ঞান হারালাম। হাঁটার ক্ষমতাও আমার ছিল না। শয্যশায়ী হয়ে সারাদেহ ফোঁড়ায় ভরে গেলো। ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়লাম। আমার ডাক্তার জানালেন – আর মাত্র দু’সপ্তাহ বাঁচবো।

দারুণ আঘাত পেলাম। নিজের উইল তৈরী করলাম, তারপর চুপচাপ শুয়ে শুয়ে শেষেরে অপেক্ষায় পড়ের রইলাম। আর লড়াই বা দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই। মন হালকা করে ঘুমালাম। আগে সপ্তাহের পর সপ্তাহ টানা দু’ঘন্টাও ঘুমোইনি, আর এখন শিশুর মত ঘুমোলাম। আমার সব ক্লান্তি কোথায় যেন চলে গেলো, ওজনও আমার বাড়তে লাগলো।

‘ক’সপ্তাহ পরে ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটতে পারলাম। ছ’সপ্তাহ পরে কাজে যোগ দিতে পারলাম। যেখানে বছরে বিশ হাজার ডলার আয় করছিলাম, আর এখন যে সপ্তাহে ত্রিশ ডলার পেলাম তাতেই আমি খুশি। কাঠের টুকরো বিক্রি করাই আমার কাজ ছিল। তবু আমি একটা শিক্ষা পেয়েছি – আর দুশ্চিন্তা নয়, অতীত নিয়ে ভাবনা নয় – যা গেছে তার জন্য দুঃখ একেবারে নয়। ভবিষ্যত নিয়েও আর কোন আতঙ্ক নয়। আমার সমস্ত শক্তি আর আগ্রহ দিয়ে কাঠের টুকরো বিক্রির কাজ করে চললাম।’

 

এবার এডওয়ার্ড ইভান্স দ্রুত উন্নতি করলেন। কয়েক বছরেই তিনি কোম্পানীর প্রেসিডেন্ট হয়ে গেলেন – ইভান্স প্রোডাক্টস কোম্পানী। রেফারেন্স এই লিংকে। কোনদিন গ্রীনল্যান্ডে গেলে আপনি হয়তো ইভান্স ফিল্ডেই নামবেন – ঐ বিমান ক্ষেত্রটি তারই সম্মানে নামাঙ্কিত। এডওয়ার্ড ইভান্স এই সম্মান হয়তো পেতেন না যদি না তিনি “রোজকার জীবন যাপন” করতেন।

 

তাই একবার চিন্তা করে দেখুন আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়, আপনার বর্তমান জীবনটাকেই উপভোগ করুন। আর বেঁচে থাকুন প্রতিটা নতুন দিন

এই লিখাটি আপনার ভাল লেগে থাকলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের মাঝে। আপনার এই শেয়ার আরো একজনের উপকার হতে পারে। কমেন্ট করে জানাতে পারেন আপনি কি বিষয়ে আর্টিকেল চান। আমরা আপনার পরামর্শকে সম্মানের সাথে গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

 

ভাল থাকবেন সবসময়। সবার জীবন অনেক সুন্দর হউক।


শেয়ার করুন

Leave a Comment